করপোরেট করহার ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব মোবাইল অপারেটরদের

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর করপোরেট করহার অন্তত ১৫ শতাংশ হ্রাস করে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর সংগঠন এমটব।
আজ বুধবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এস এম ফরহাদ এই প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রাক-বাজেট আলোচনায় এমটব ছাড়াও বৃটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি), বিড়ি শিল্প মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।
এনবিআর এর পক্ষে সদস্য মো. মাসুদ সাদিক (কাস্টমস নীতি), জাকিয়া সুলতানা (ভ্যাট নীতি) ও সামসুদ্দিন আহমেদ (আয়কর নীতি) উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে এমটব মহাসচিব মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ এবং অতালিকাভূক্ত কোম্পানির কর হার ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন।
এসময় তিনি অলাভজনক অপারেটরের উপর ন্যুনতম ২ শতাংশ টার্নওভার কর প্রত্যাহার বা যুক্তিসঙ্গত করার দাবি জানান। এমটব মহাসচিব মোবাইল ডেটা পরিষেবায় সম্পূরক শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আদর্শ করহার হিসেবে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি।
ফোর জির ক্ষেত্রেও ভ্যাট প্রত্যাহারের সুযোগ চেয়ে তিনি বলেন, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি এক বিদেশ আদেশ অনুযায়ী বিটিআরসিতে টু জি ও থ্রি জির রাজস্ব প্রদানের ক্ষেত্রে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ফোরজি’র ক্ষেত্রেও এই সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানান তিনি।
মোবাইল সিমের উপরে আরোপিত ২০০ টাকা কর বিলুপ্তি ও সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোতে ভ্যাট ছাড়েরও প্রস্তাব করে সংগঠনটি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের অন্যতম প্রধান তামাক কোম্পানি বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম নকল ব্যান্ড রোল এবং নকল সিগারেট বন্ধ করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, এই নকল সিগারেটের কারণে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। নকল সিগারেট বন্ধ করা হলে রাজস্ব আরও বাড়বে।
এই খাতে নতুন করে করারোপ না করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন করে কর বাড়ানো হলে ভোক্তাদের ওপর আরও চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশ থেকে চোরাচালান হয়ে বিদেশি সিগারেট ঢুকবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। এসময় বিএটিবিসি’র পরিচালক শেখ সাবাব আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সিগারেট উপরে রাজস্ব নির্ভরতা থাকবেই। এই খাতে করহার বাড়িয়ে খাতটিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা যেমন থাকবে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, শুধু ভ্যাট বাড়িয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, বরং চোরাচালানের সুযোগ তৈরী হয়। তাই আমরা প্রতিবছর তামাক কোম্পানিগুলোর বিষয়ে সতকর্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি।’
বিড়ি শিল্প, মালিক সমিতির সভাপতি কৃঞ্চ বিজয় দে এনবিআর এর কাছে বিড়ির উপর অর্পিত ১০ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। এছাড়াও সিগারেটের মতো বিড়িতেও বাকিতে ব্যান্ডরোল প্রদানের দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ খাবার পানির ওপর অর্পিত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন। এসময় তিনি কোমল পানীয়’র উপর সকল ধরণের কর মিলে মোট ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কর নেওয়া হচ্ছে। এটাকে যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেন তিনি।
একইসাথে কার্বোনেটেড বেভারেজের সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব রাখেন তিনি।

Related posts

Leave a Comment