খোলাবাজারে ডলার ১২০ টাকায় উঠেছে

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগের পরও ডলারের সংকট কাটছে না। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত কমছে টাকার মান। এক দিনের মধ্যেই খোলাবাজারে ডলারের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় ঠেকেছে। এ দামেও মিলছে না প্রত্যাশিত ডলার। গত কয়েক বছরের মধ্যে কখনো এক দিনে ডলারের দর এত বেড়ে যেতে দেখা যায়নি।
ডলারের বাজার কেন নিয়ন্ত্রণে নেই—জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বলে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ থাকছে না। এটি বাজারের ওপরে ছেড়ে দেওয়া দরকার। এতে করে হুন্ডির মাত্রাটা কমে যাবে। তিনি বলেন, এদিকে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে না। অন্যদিকে দাম বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে হুডির মাত্রাটা বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আসলে ডলারের অস্থিরতার মূল কারণ হচ্ছে—আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমে গেছে কিন্তু আমদানি প্রবৃদ্ধি সেভাবে কমছে না। যে কারণে আমাদের রিজার্ভের ওপর ছাপ বেড়ে যাচ্ছে, টাকার মানও কমে যাচ্ছে।
সোমবার খোলাবাজারে ডলার ১১৫ টাকা ৬০ পয়সায় বিক্রি হয়। এর আগে গত ২৭ জুলাই খোলাবাজারে ডলারের দাম উঠেছিল ১১২ টাকা। গতকাল বুধবার খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১২০ টাকায় পৌঁছায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খোলাবাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়।
খোলাবাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, খোলাবাজারে তীব্র সংকট রয়েছে ডলারের। ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকরাও কম আসছেন। এ কারণে ডলারের সরবরাহ কম। খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সেও ডলারের দর অনেক বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান বেশ কিছুদিন ধরেই টানা কমছে। সোমবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর আরো ৩০ পয়সা কমে প্রতি ডলার ৯৫ টাকা টাকায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাংকগুলো এই দরে ডলার কিনেছে।
ডলারসংকট নিরসনে সম্প্রতি একসঙ্গে চারটি সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেগুলো হলো ব্যাংকের ডলার ধারণের সীমা (এনওপি) হ্রাস, রপ্তানিকারকের প্রত্যাবাসন কোটায় (ইআরকিউ) ধারণকৃত ডলারের ৫০ শতাংশ নগদায়ন, ইআরকিউ হিসাবে জমা রাখার সীমা কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা এবং অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ইউনিটে স্থানান্তর। এছাড়া ৫০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের বেসরকারি যে কোনো আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে সংকট কিছুটা কমার আশা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

Related posts

Leave a Comment