বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের ভান্ডার শূন্য

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

ইংল্যান্ডে বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমস শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৭২ দেশ নিয়ে আয়োজিত ২২তম কমনওয়েলথ গেম। এখন হিসাব-নিকাশ চলছে কে কতোটা পদক পেল। কার পারফরম্যান্স কেমন হলো। কোন দেশ কী পরিকল্পনা নিয়ে গেমসে গিয়েছিল আর কতোটুকু সাফল্য পেল। এসব চিন্তা-ভাবনার মধ্যে খেলাধুলার দেশগুলো নতুন পরিকল্পনা করছে। আগামীতে তারা কীভাবে নতুন করে এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ এবারের গেমস হতে কী পেয়েছে। সাতটা ডিসিপ্লিনে খেলে শূন্য হাতে ফিরেছে। শুধুই কি শূন্য হাত, সব খেলোয়াড় হিটেই বাদ হয়েছে। এটা লজ্জার। কারণ বাংলাদেশ কমনওয়েলথ গেমস হতে পদক পেয়েছে অনেক আগেই। এখন বলে কয়ে পদক জয় করবে। এটাই স্বাভাবিক। হচ্ছে না কারণ পরিকল্পনা নেই। এবারও কমনওয়েলথ গেমসে ভারত ২২টি স্বর্ণপদক জয় করেছে। সব মিলিয়ে ৬১টি পদক পেয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে ভারত। পাশের দেশ, বড় দেশ বলে বলে বাংলাদেশের ক্রীড়া সংগঠকরা আর কতদিন চলবেন। রাজনৈতিক কারণে খেলাধুলার দুনিয়ায় অনগ্রসর অবস্থায় পাকিস্তান। সেই পাকিস্তান দুই স্বর্ণ, তিন রৌপ্য এবং তিন ব্রোঞ্জসহ আটটি পদক জয় করেছে। আর শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থা তো সবার জানা। রাজনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কার অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরও বার্মিংহাম গেমস থেকে শ্রীলঙ্কা চারটি পদক পেয়েছে। অথচ বাংলাদেশ ফিরেছে শূন্য হাতে। এসব নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের নীতিনির্ধারকদের ভাবনা নেই। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গোলকোস্ট কমনওলেথ গেমস হতেও শুটিংয়ে রৌপ্যপদক এসেছিল দুটি।
১৯৯০ সালে অকল্যান্ড কমনওলেথ গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক পায় বাংলাদেশ। আতিকুর রহমান এবং আব্দুস সাত্তার নিনি শুটিংয়ে পদক এনে দেশকে উপহার দিয়েছিলেন। ২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমস হতে শুটিংয়ে স্বর্ণপদক উপহার দিয়েছিলেন আসিফ হোসেন খান। এর পর থেকে প্রতি গেমসে বাংলাদেশ পদক তালিকায় নাম তুলেছে। এবারই শূন্য হাতে ঘরে ফিরল। কমনওয়েলথ গেমসে যে কয়টি পদক এসেছে সবই শুটিংয়ে। এবার শুটিং ডিসিপ্লিন ছিল না বার্মিংহামে। তাই বলে বাংলাদেশ পদক তালিকায় থাকবে না। শুটিং ডিসিপ্লিন থাকবে না এটা তো আগেই জানা। তাহলে কেন অন্যান্য খেলার দিকে নজর দেওয়া হলো না। অংশগ্রহণের নামে বিমানের পেটে ঢুকে বহর যাচ্ছে বিদেশে। বিদেশে যাওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের লাইন লম্বা হয়ে যায়। কর্মকর্তারা নিজেদের নাম রাখতে গিয়ে কোচ বাদ দিয়ে নিজেরা কোচ পরিচয়ে চলে যান। একটা দেশ ঘুরে এসেই আরেকটা দেশে যাওয়ার টিকিট নিশ্চিত করতে হয়। কংগ্রেসে যাবেন, না হয় দলনেতা হয়ে যাবেন, কোনো কিছু না থাকলে কোচ হয়ে যাবেন। যেতেই হবে। বিদেশে গেমস বা খেলায় অংশগ্রহণের নামে এভাবে আর কতদিন দেশের নাম অনুজ্জ্বল থাকবে।
একটা গেমস শেষ হলে তখন থেকেই নতুন পথ তৈরি করার পরিকল্পনা হয়। রিও অলিম্পিক গেমস শেষ হওয়ার পর গেমসে যাওয়া কর্মকর্তারা একটা পরিকল্পনা দিয়েছিলেন। সেটা কী বাস্তবায়ন হয়েছে। টোকিও অলিম্পিক গেমস শেষ হয়ে যাওয়ার পর কমনওয়েলথ গেমস হবে সেটা তো আগেরই সিদ্ধান্ত। তাহলে টোকিও অলিম্পিক থেকে ফেরার পর কমনওয়েলথ গেমস নিয়ে কেন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে পদক জয়ের টার্গেট করা হলো না।

Related posts

Leave a Comment