শুভদিন অনলাইন রিপোর্টারঃ
তেহরানে ‘ভুলবশত’ ইউক্রেনের বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্যের ভিডিও ধারণকারীকে আটক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টতার কোনো অভিযোগ আনা হবে তার বিরুদ্ধে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনায় কেবল একজনকে দায়ী করা উচিত হবে না। এটা সচরাচর কোনো ঘটনা না, সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।-খবর সিএনএনের
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসেন ইসমাইলির উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফারস মঙ্গলবার জানিয়েছে, এই বিধ্বস্তের ঘটনায় একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটক করাও হয়েছে। কতজন আটক কিংবা তাদের ভূমিকা কী, তা বিস্তারিত বলা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।
এদিকে তাসনিমের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার দৃশ্যের ভিডিও ধারণকারীও আটকদের মধ্যে রয়েছেন। এতে ব্যক্তিদের নাম ও তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো তথ্য কিংবা ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।
ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের ৭৫২ ফ্লাইটটি ভূপাতিত করার ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের শাস্তির কথা বলেছেন রুহানি। ঘটনার তদন্তে কয়েক ডজন বিশেষজ্ঞ ও উচ্চপদ মর্যাদার বিচারকদের নিয়ে একটি বিশেষ আদালত গঠনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
রুহানি আরও বলেন, কেবল একক ব্যক্তি এই ঘটনায় কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। অন্যরাও রয়েছেন।
ইরানি গণমাধ্যম বলছে, বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা ব্যক্তিকে বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আটক করেছে।
কিন্তু প্রাথমিকভাবে ভিডিওটি পোস্ট করা লন্ডনভিত্তিক ইরানি সাংবাদিক জোর দিয়ে বলেছেন, তার সূত্র নিরাপদ রয়েছেন। ইরানি কর্তৃপক্ষ ভুল ব্যক্তিকে আটক করেছে।
গত বুধবার ভোরে তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ছয় মিনিট পর ইউক্রেন এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজাটি বিধ্বস্ত হয়। এতে আরোহী ১৭৬ জনের সবাই নিহত হন। যাত্রীদের বেশিরভাগই ছিলেন ইরান ও কানাডার নাগরিক।
প্রথমে যান্ত্রিক সমস্যার কারণে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে দাবি করে ইরান। কিন্তু উড়োজাহাজটি ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন ইরানের কর্মকর্তারা তা ডাহা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে বলছিলেন– যান্ত্রিক ত্রুটিতেই দুর্ঘটনায় পড়ে ওই উড়োজাহাজটি।
ঘটনার তিন দিন পর শনিবার ‘ভুল করে’ উড়োজাহাজটি ভূপাতিতের কথা স্বীকার করে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে ইরান কর্তৃপক্ষ। এর পরই বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে ইরানে।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটির তথ্যপ্রমাণ বেরিয়ে আসতে থাকার মধ্যে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পরিচালনায় যারা আছেন, তারা উড়োজাহাজটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে ভুল করে সেটির দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছেন।
মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি হত্যার পর এ বদলা নিয়ে ইরান ইরাকের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর থেকেই দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা বিভাগ উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।