মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ১জুলাই শুক্রবার শান্তি ও মঙ্গল কামনায় মন্দির প্রাঙ্গনে ভক্তদের নিয়ে হোম যজ্ঞ, রথযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
শ্রী শ্রী গোবিন্দজিউ মন্দির কমিটি ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকন ঠাকুরগাঁওয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মুন্সিরহাট ইসকন প্রচার কেন্দ্রের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র আগরওয়ালা, ইসকন বাংলাদেশের সহ সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও গড়েয়া ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি বিনয় স্বামী মহারাজ, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, শিক্ষাবিদ প্রফেসর মনতোষ কুমার দে, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, মহিলা আ’লীগের সভাপতি দ্রৌপদী দেবী আগারওয়ালা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার গুপ্ত বুয়া, তপন কুমার ঘোষ, অশোক কুমার ঘোষ, গড়েয়া ইসকন মন্দিরের সহকারী অধ্যক্ষ কংসহন্ত দাস সহ অন্যান্যরা। রথযাত্রায় সনাতন ধর্মালম্বী হাজারো নারী ও পুরুষ অংশ নেন।
সভা শেষে হাজারো ভক্তদের নিয়ে বেশ কয়েকটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এর মধ্যে শ্রী শ্রী গোবিন্দজিউ মন্দির থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আশ্রমপাড়া রামকৃষ্ণ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। অপরদিকে আরও একটি শোভাযাত্রা গোবিন্দনগর শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব উপলক্ষে সেখানে ৮ দিন ব্যাপী সনাতন ধর্মসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মাল্টিমিডিয়া সেমিনার, পদাবলী কীর্তন, বৈদিক নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র, ছাত্র-ছাত্রীদের পারমার্থিক কুইজ প্রতিযোগিতা, আরতি কীর্তন ও মহা হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হবে। পরে ৮ জুলাই উল্টো রথের মধ্য দিয়ে পুনরায় একই স্থানে গিয়ে শেষ হবে।
উল্লেখ্য, পঞ্জিকা অনুসারে আষাঢ় মাসের শুকাপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। মনে করা হয়, জগন্নাথদেবের রথের প্রতিটি অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। তিনটি রথে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী অধিষ্ঠান করছেন। ফলে রথের রশি স্পর্শ করলেই তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর চরণ স্পর্শ করা হয়। এছাড়া প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্ম হয় না। এছাড়া মনে করা হয়, সকল পাপ থেকেও মুক্ত হওয়া যায়। জগন্নাথদেবের রথ টানতে পারলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফললাভ হয়। নববিবাহিতরা রথের রশি ছুঁয়ে তাই প্রভুর আশীর্বাদ নেন। এছাড়া ভক্তদের মতে এই রথের রশির মাথায় ঠেকালে আর দুস্বপ্ন আসে না। রোগ থেকেও মুক্তি লাভ হয়।