শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পানির দামেও বিক্রি হচ্ছে না কোরবানির পশুর চামড়া। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে চামড়া। সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে ৩-৪ হাজার টাকা মূল্যের পশুর চামড়া ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লোকসানের মুখে পড়েছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। রবিবার (১০ জুলাই) মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
মির্জাপুর উপজেলার পৌরসভা এবং ১৪ ইউনিয়নে কমপক্ষে ১৪ হাজার ৫০০ পশু কোরবানি করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া কিনে মির্জাপুর উপজেলা সদর, পাকুল্যা, জামুর্কি, কুরনী, দেওহাটা, গোড়াই, হাটুভাঙ্গা, বাঁশতৈল, তক্তারচালা ও আজগানা এলাকায় এনে মহাজন এবং ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
আগধল্যা গ্রামের সিদ্দিক হোসেন ও রাজন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘দেড় লাখ টাকায় কোরবানির গরু কিনে চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ৩০০ টাকায়। অথচ তিন থেকে চার বছর পূর্বেও এই একই দামের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এ বছর খাসির চামড়া বিক্রিই হচ্ছে না। এখনো বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে পশুর চামড়া।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন কওমি মাদরাসা ও এতিম খানার শিক্ষার্থী এবং আলেম ওলামারা কিছু টাকার আশায় ভ্যান ও রিকসা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পশুর চামড়া সংগ্রহ করছেন।
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী শুভ (৪৫), মীর হোসেন (৫৫) ও সুজন (৪৩) বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা, একটি সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি এবং ট্যানারি মালিকদের কারণে চামড়ার বাজারে ধস নামে। এ বছর বড় সাইজের একটি গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি ও ছোট সাইজের একটি গরুর চামড়া ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা এবং খাসির চামড়া ১০-১৫ টাকায় কিনেছেন। গ্রাম থেকে চামড়া কিনে শহরে নিয়ে আসতে চামড়া প্রতি যাতায়াত খরচ আরও ৬০-৭০ টাকা বেশি পড়েছে। একটি সিন্ডিকেট চক্রের কারণে তারা কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। যে চামড়ার খরচ পড়েছে ৪৭০ টাকা, মহাজন ও ট্যানারি মালিকরা সেই চামড়ার দাম বলছেন ১৫০-২০০ টাকা। লাভের আশায় বিভিন্ন জনের নিকট থেকে ধার এবং চড়া সুদে টাকা এনে চামড়া কিনেছি। কিন্তু লাভ তো দুরের কথা চালান দামও বলছেন না সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা। ফলে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
বিষয়টির দিকে সুনজর দেওয়ার জন্য চামড়া ব্যবসায়ীরা সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইফুদ্দিন আহমেদ সুজন বলেন, ‘সরকার পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সেই নির্ধারিত দামে চামড়া কিনেও নানা কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন।’-ইত্তেফাক