বিএনপির মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, আহত অর্ধশত

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বিএনপির প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার যশুরগাঁও বাইপাশ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ককটেল ও লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মৃদু লাঠি চার্জ করা হয়।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়ে মিছিল বের করেন উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে ছাত্রলীগও মিছিল করে ওই এলাকায় এসে তাদের মিছিলে হামলা ও মারধর শুরু করে।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাফিজুল ইসলাম খান, মহিলা দলের নেত্রী সেলিনা রিনা, যুবদলের সভাপতি জয়নাল আবেদীন জেমস, যুবদল নেতা মাসুদ রানা, বিএনপি নেতা মামুন, আবুল মৃধা, রণি,আজিম, বাবুল বেপারী, কাউসার হোসেন, আবুল কালাম আকাশ, তানভীর হাসান তুহিন, রোকেয়া বেগম, প্রিন্সসহ বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপি নেতাকর্মীর দাবি, ছাত্রলীগ বিনা উস্কানীতে তাদের মিছিলে হামলা করে অন্তত ৫০ জন নেতা কর্মীকে মারধর করে। আহতদের মধ্যে ১৪ জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত ২ জনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওন খান দাবি করে বলেন, বিএনপির লোকজন তাদের মিছিলের দিকে এগিয়ে এসে হট্টোগোল সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের মারধর করে। আহত ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার পর বেলা ১১ টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব সেলিম আহমেদ ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ফ্লাইওভারের নীচে অবস্থান নেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে শ্রীনগরে প্রবেশে বাধা দেয় বলে বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন। পরে তারা আটপাড়া এলাকায় সমাবেশ করেন।
দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিহত করতে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মসিউর রহমান মামুনের নেতৃত্বে এম রহমান শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে একটি মিছিল বের হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে ১৪টি ইউনিয়নে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ সমাবেশের খবর পাওয়া যায়নি।
আহত শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। যশুরগাঁও বাইপাশ এলাকায় আমাদের মিছিলটি আসলে হঠাৎ করে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের মিছিলে হামলা চালায়। এতে আমাদের মহিলা নেত্রীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।
শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. তোফাজ্জল হোসেন জানান, শ্রীনগর বাইপাশ এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অরাজগতা ও বাস ভাঙচুরের চেষ্টা করলে আমাদের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এতে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ও ছাত্রলীগের একই স্থানে কর্মসূচি ছিল। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে আমরা মৃদু লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে বিএনপি নেতা হাফিজুল ইসলাম খানসহ কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ককটেল ও লাঠিসোটা উদ্ধার করা হয়েছে। ছাত্রলীগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বিএনপির কেউ থানায় আসেনি। কাউকে আটকও করা হয়নি।

Related posts

Leave a Comment