ইনসানে কামিল

ডাঃ মৌলভী কাজী আবদুর রহমান

পর্ব- এগার

হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)-এর গোপনে ইসলাম প্রচার

ইসলামের বাণী প্রচারের প্রত্যাদেশ প্রাপ্তির পর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তিন বৎসর গোপনে ইসলাম প্রচার করেন। প্রথমে হযরতের সহধর্মিনী বিবি খাদিজা, হযরত আলী, হযরত জায়েদ, উম্মে আয়মন, রাসুলের বাল্য বন্ধু হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত ওসমান (রাঃ), হযরত জোবায়ের (রাঃ), হযরত আবদুর রহমান (রাঃ), এবনে আওফ হযরত তালহা (রাঃ), হযরত ছায়াদ এবনে আক্কাস (রাঃ), হযরত আবু ওবায়দা (রাঃ), হযরত ওছমান এবনে মাছউদ (রাঃ), ছোহেব রূমী (রাঃ), আবদুল্লাহ এবনে মাছউদ (রাঃ) এরা নবীজির দাওয়াতে ঈমান এনে পবিত্র ইসলামের ছায়া তলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ সময়ের ইসলামের সব কাজই গোপনে করা হতো।
হযরত মাঝে মাঝে এ সব নব দীক্ষিত ঈমানদারদের নিয়ে দূর-প্রান্তরে চলে যেতেন এবং সেখানে এদেরকে ধর্মের তালিম দিতেন আর প্রাণ ভরে দয়াময় আল্লাহর এবাদত করতেন। কিন্তুু গোপন সংবাদ বেশী দিন আর গোপন রইলো না। অচিরেই কাফেরগণ সব জেনে গেলো। তারপর শুরু হলো অবর্ণনীয় এবং দুঃসহ অত্যাচারের এক তান্ডব লীলা। দিনের পর দিন তাদের অত্যাচারের পরিমাণ ভীষণ বেড়ে গেল। কাফেরদের ধারণা ছিলো, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে এক সময় ধর্মত্যাগীরা পুনরায় তাদের ধর্মে ফিরে যাবে। কিন্তুু যাদের মন-প্রাণ-দেহ আল্লাহতে একেবারে নিবেদীত, আল্লাহর তৌহিদে বিলীন, খাঁটি ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত, খোদায়ী শক্তিতে শক্তিমান হয়েছে- এই সামান্য অত্যাচারকে তারা ভ্রুক্ষেপ করবে কেন? বরং তাদের ঈমানী শক্তি আরো বহুগুণ বেড়ে গেল।
ঈমান মজবুত এবং দৃঢ় হলো পাহাড়ের পাথরের চাইতেও বেশী। তাদের ঈমানী শক্তির প্রভাব কাফেরদের অন্তরে প্রবেশ করে দিন দিন কেবল মুসলমানদের সংখ্যা বেড়েই চললো। আস্তে আস্তে তা এক গোত্র থেকে আর এক গোত্রে, এক দেশ থেকে আর এক দেশে, এই ভাবে দেশ থেকে দেশান্তরে তথা সকল মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো।

আল্লহ পাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন-

অর্থাৎ “সত্য এসেছে (প্রকাশ হয়েছে) মিথ্যা (বাতেল) দূরীভূত হয়েছে। নিশ্চয় বাতেল (অন্ধকার) দূর হয়েছে, আলো প্রজ্জলিত হয়েছে।”
(সুরা বনী ইস্রাফীল-৮০ )

দুনিয়াবাসী হুশিয়ার হও। বে-ঈমান ধোঁকাবাজ সত্বর সাবধান হও।
বর্ণিত আছে, সত্যকে প্রকাশের উদ্দেশ্যে আপনজনের সাথে পরামর্শ সভায় নবীজির সাথে দ্বীন প্রচারে জীবনের বিনিময়ে হলেও সহযোগীতা করবে বলে দৃঢ় মত প্রকাশ করলেন আবু তালেবের পুত্র আলী।
প্রকাশ্যে সত্য প্রচারের নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর পিয়ারা রাসুল মক্কা বাসিগণকে ছাফা পর্বতের পাদদেশে হাজির হওয়ার জন্য অহবান করলেন। ডাক শুনে সবাই যথা সময়ে হাজির হওয়ার পর হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সাফা পর্বতে আরোহন করে প্রত্যেক গোত্রের নাম ধরে জিজ্ঞাসা করলেন-
“হে কোরেশ বংশীয়গণ ! আজ এ পর্বতের শিখরে দাঁড়িয়ে আমি যদি তোমাদিগকে বলি পর্বতের অন্য দিকে শত্রু সৈন্যের এক প্রবল বাহিনী তোমাদের যথা সর্বস্ব লুন্ঠন করার জন্য অপেক্ষা করছে, তা হলে তোমরা কি আমার এই কথার উপর বিশ্বাস করবে?
সকলে সমস্বরে উত্তর করলো- নিশ্চয়! বিশ্বাস করবো! বিশ্বাস না করার কোন কারণ নাই। কারণ আমরা কখনই তোমাকে মিথ্যার সংস্পর্শে আসতে দেখিনি।
তখন আল্লাহর হাবীব হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) গুরুগম্ভীর স্বরে বলতে লাগলেন, যদি তাই হয় তবে আমি তোমাদেরকে আজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরী একটি বিষয় জানাতে চাই। আর তা হলো- সারা জাহানের সৃষ্টিকর্তা, পালন কর্তা এবং সব কিছুর মালিক এক আল্লাহ। তার কোন শরিক নাই। “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ!”
আল্লাহই একমাত্র মাবুদ, তিনি ব্যতিত আর কোন মাবুদ নাই। তিনি অদ্বিতীয়। তিনি যা ইচছা তাই করতে পারেন এবং করেন। তিনি সকল শক্তির আঁধার। আর এ কথার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা, একীনকে মজবুদ করা, তাঁর সকল নির্দেশের উপর বিশ্বাস স্থাপন করাই মানব জাতির মুক্তি এবং শান্তির পথ।
হে আবদুল মোতালেবের বংশধরগণ! হে যোহরার বংশধরগণ! হে আমার আত্মীয়-স্বজন এবং দেশবাসীগণ! তোমাদের নিকট আল্লাহর তৌহিদের বাণী, অহদানীয়াত, রাবুবিয়াত ও উবদিয়েিতর দাওয়াত দিচিছ। সেই সাথে তার অবাধ্য ও নির্দেশ অমান্যকারীকে কঠোর শাস্তির কথা জানাচিছ। যদি তোমরা ইহলোকে এবং পরলোকের মঙ্গল চাও তবে সকলে- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ” এই পবিত্র কলেমা পাঠ কর এবং আল্লাহর নির্দেশের উপর নিজকে প্রতিষ্ঠিত কর। নিজ হাতে দেব দেবীর মূর্তি বানিয়ে তাকেই রক্ষা কর্তা, রিজিক দাতা ও পালন কর্তা ইত্যাদি ভেবে পূজা অর্চনা করা পরিত্যাগ কর। এ সব দেব-দেবী তো নিজকেই রক্ষা করতে পারে না। যারা নিজকে রক্ষা করতে পারে না তারা অপরকে রক্ষা করবে কি ভাবে? সুতরাং এদের পূজা করা সম্পূর্ণ মূর্খতা।”
এ সব উপদেশ শুনে আবু লাহাব বলে উঠলো- তোর সর্বনাশ হোক! এ সব বলার জন্যই কি আমাদের ডেকে সমবেত করেছিস?

আল্লাহ পাকের দাওয়াতের তিনটি স্তর

 

নূর নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)- এর উপর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে পবিত্র “কোরআন” নাজিল করেছেন তাকেই পূর্ণ শরীয়তনামা বলা হয় (আইন পুস্তক)। এটি দুনিয়ার সকল মানুষের জন্য তাদের সমস্ত জীবনের সকল কর্মের সংবিধান। দুনিয়া ও পরজীবনের (আখেরাতের) সব বিষয় অর্থাৎ যা হয়েছে আর যা হবে, যা ঘটেছে আর যা ঘটবে, যা মানুষকে করতে হবে বা ছাড়তে হবে আর যা মানুষ নিজ কৃতকর্মের ফল হিসাবে পাবে এবং ভোগ করবে ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের পূর্ণ বিবরণী এটি।
হ্যাঁ, কিছু বিষয় আছে যা আল্লাহ পাক মানুষের কাছে প্রকাশ করেন নাই। গোপন রেখেছেন। এ সব বিষয় মানুষের জানা, বুঝা ও ধারণা করার বাইরে। তবে যদি আল্লাহ পাক ইচছা করেন তবে তার কোন বান্দাকে দিয়ে ঐ সব করিয়ে নিতে পারেন। তিনি সর্ব শক্তিমান। হযরত আদম (আঃ) হতে শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত সব নবী ও রাসুলগণই ছিলেন তেমনি মহা মানব। তাঁদের দিয়েই আল্লাহ পাক দ্বীনের দাওয়াতের প্রচার বা তবলীগের কাজ করিয়েছেন। আর এ কাজ ছিল তিনটি তবকায় বিভক্ত।

প্রথম তবকা:-
হযরত আদম (আঃ) হতে হযরত নুহ (আঃ) পর্যন্ত এই তবকায় হারাম ও হালালের ক্ষেত্রে শরীয়তের কোন বিধান ছিলো না। তাদের জন্য হুকুম ছিলো শুধুমাত্র তাওহীদ, ওয়াজ-ওজায়েফ (অজিফা) বা আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করা। আল্লাহ এক এবং তাঁর কোন শরীক নাই- এ কথা বিশ্বাস করা। আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা প্রকাশ করা। আদব, সম্মান প্রদর্শন এবং রীতিনীতি প্রচলন করা। এ সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে কোন বিবাদ বা বিতর্ক হলে তা মীমাংসার উপায় হিসাবে উভয় পক্ষকে একটি করে পশু কোরবানী করতে হত এবং আকাশ হতে আগুন নেমে যে ব্যক্তির কোরবানীর পশুর শবদেহ ভক্ষণ করত বা জ্বালিয়ে দিত তার পক্ষেই আসমানী ফয়সালা (আল্লাহর ফয়সালা) বা রায় বলে গৃহীত হত।

দ্বিতীয় তবকা:-
এ তবকা হযরত নুহ নবী (আঃ) হতে হযরত মুসা নবী (আঃ) পর্যন্ত। এ তবকা হতেই হালাল হারাম এবং এবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহর শরীয়তের বিধান চালু হয়। এ সময় মানুষ নবী ও রাসুলগণের কথা না মানলে, আল্লাহর অবাধ্য হয়ে আল্লাহর শরীয়তের গন্ডির সীমা অতিক্রম করে চললে তাদের উপর আল্লাহর আযাব (গজব) নেমে আসত। ঝড়, প্লাবন, ভূমিকম্প, অগ্নি ও পাথর বৃষ্টি, মহামারী ইত্যাদি দ্বারা ধ্বংস করে দিত।

তৃতীয় তবকা:-
এ তবকা হযরত মুসা (আঃ) হতে হযরত মোহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত। ফেরাউনকে নীল দরিয়ায় ডুবিয়ে মারার তিন মাস পর হতে এ তবকা শুরু হয়। হযরত মুসা (আঃ) সিরিয়া গমনের পথে সিনাই মরুভুমিতে পৌঁছেন। তখন তাঁর উপর পবিত্র তৌরাত কিতাব নাজিল হয়। এ সময় হতেই তাঁর উপর জ্বিহাদ করার হুকুম অবতীর্ণ হয় এবং পূর্বের ঐ সকল প্রাকৃতিক আজাবের নিয়ম বন্ধ হয়ে যায়। অবাধ্য, ঔদ্ধত্য, অত্যাচারী ও সীমালঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার হুকুম জারী করা হয়।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর জীবনেও শরীয়তের এই বিধান জারী ছিল এবং তিনির উম্মতগণের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত এ হুকুম জারী থাকবে। তবে হযরত মুসা (আঃ)-এর সময় যুদ্ধ বন্ধীদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম ছিলো অত্যন্ত কঠোর। আল্লার হাবীব (সাঃ)- এর সময় তা অত্যন্ত কোমল ও সহনীয় করা হয়।
উপরের আলোচনা হতে এটাই দেখা গেলো যে হযরত নুহ নবীই (আঃ) সর্ব প্রথম শরীয়তের নবী এবং তিনির দ্বারাই শরীয়তের বিধান সর্ব প্রথম প্রবর্তন করা শুরু হয়, আর সে সাথে আল্লাহর দ্বীন হিসাবে ইসলামকে (ধর্ম) নির্ধারণ করা হয়।

তায়েফে ইসলামের দাওয়াত এবং হযরত রাসুলে পাক (সাঃ)- এর উপর তায়েফবাসির পৈশাচিক অত্যাচার

প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) ইসলাম প্রচারের আশায় পালিত পুত্র জায়েদ (রাঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে নবুয়তের দশম বৎসরে পায়ে হেঁটে বহু কষ্টে তায়েফ নগরে গিয়ে উপস্থিত হন। মক্কা হতে প্রায় ৬০ মাইল দূরে এই তায়েফ নগরী অবস্থিত।
তিনি সেখানে তায়েফবাসীদের কাছে আল্লাহ পাকের তাওহীদের দাওয়াত, সত্যের বাণী পৌঁছে দিয়ে তাদের নিকট হতে সত্য প্রচারে সহানুভূতি চাইলেন। কিন্তু তারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়া তো দূরের কথা কর্ণপাত পর্যন্ত করলো না।
অবশেষে তিনি তায়েফের নেতৃস্থানীয় তিন জন ব্যক্তির সাথে নিজে গিয়ে সাক্ষাৎ করলেন। বিশেষ ভাবে তায়েফের বিখ্যাত সকীফ বংশের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করলেন। আল্লাহ, রাসুল, দুনিয়া, আখেরাত, মৃত্যু, পুনর্জীবন, হিসাব, শেষ বিচার, শাস্তি, বেহেশত ও দোজখ ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা সাপেক্ষে আল্লাহর দাওয়াত তাদের নিকট পৌঁছে দিলেন।
এ ছাড়া আরো অনেক বিষয় তাদের নিকট তুলে ধরে সাধ্য মত চেষ্টা করলেন তাদের বুঝাতে। কিন্তু তাতে হেদায়েত তো দূরের কথা, তাদের পাষাণ হৃদয়ে সামান্যতম দাগ ও কাটলোনা। বরং আরও ক্ষিপ্ত হয়ে নানা প্রকার বেফাস কথা বলে তাকে কষ্ট দিল। ঠাট্রা বিদ্রুপ করে পরিবেশ খারাপ করে তুললো। কেউ বললো- আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে নারাজ। কেননা, তোমার কথা অনুসারে তুমি যদি সত্যই নবী হয়ে থাকো তবে তোমার কথা শুনে তা না মানলে বা অস্বীকার করলে বড়ই বিপদ হবে। আর যদি মিথ্যাবাদী, প্রবঞ্চক হয়ে থাকো তবে এ হেন লোকের কথা শুনার কোন প্রয়োজন নেই বরং ঘৃণা ব্যাপার। কেউ বললো- দুনিয়ার নবী বানাতে তোমাকে ছাড়া আল্লাহ বুঝি আর কোন উপযুক্ত জ্ঞানী, ধনী বা সম্মানিত লোক খুঁজে পেলো না?
এ ভাবে তারা তাঁকে কত ভাবে যে তুচছ-তাচিছল্ল করছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। কিন্তু আমাদের দয়াল নবী সব কিছুকেই দ্বীন প্রচারের স্বার্থে মাথা পেতে নেন এবং নতুন উদ্যমে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য তায়েফের অন্যান্য লোকদের কাছে গমন করতে লাগলেন। গেলে কি হবে, কেউ তাঁর কথা শুনতে রাজি হলো না। উল্টো রুঢ় কন্ঠে সবাই কটু বাক্যে বলে উঠলো- যাও, যাও! এখান থেকে অনতিবিলম্বে চলে যাও। দেরী কর না।
আল্লাহর হাবীব (সাঃ) নিরাশ হয়ে ফিরে চললেন। কিন্তু পাষন্ড বেঈমানেরা এবারও তাঁকে শান্তিতে ফিরতে দিলো না। শহরের দুষ্ট ছেলেদের ডেকে তাঁর পিছনে লেলিয়ে দিল। তারা তাঁকে পাগল বলে ঠাট্রা-বিদ্রুপ করতে করতে হাতে তালি বাজাতে লাগলো। অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে করতে ইট পাথর ছুঁড়ে ক্ষত-বিক্ষত করতে লাগলো। ইট পাথরের আঘাতে তাঁর দেহ থেকে রক্ত ঝরে পায়ের জুতা পর্যন্ত ভরে গেলো। প্রাণের নবীকে রক্ষা করতে গিয়ে জায়েদও সে আঘাত থেকে রক্ষা পেলো না। আঘাতে আঘাতে এক সময় আমাদের প্রিয় নবী বেহুঁশ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। জায়েদ সব কিছু ভুলে রাসুলে পাককে রক্ষার চিন্তা করতে লাগলেন- এখন কি করা যায় ? আর একাকী তিনি কি-ই বা করতে পারেন? চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়লেন তিনি।
হায়রে পাষন্ড! তোরা একি করলি! কার উপর হাত তুললি! কার দেহের রক্তে তায়েফের মাটি রঞ্জিত করলি! তোদের অন্তরে দয়া মায়ার লেশমাত্রও কি নেই? খোদ আল্লাহ যাকে সাড়া দুনিয়ার জন্য রহমত হিসাবে পাঠিয়েছেন, যার সুপারিশ ছাড়া হাশরের দিন কোন ব্যক্তির মুক্তির উপায় নেই- তার উপর তোরা হাত তুললি? কি হবে তোদের উপায়?
জায়েদ নিজের দুঃখ কষ্টের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে আল্লাহর পিয়ারা হাবীবকে কোলে (কাঁধে) তুলে নিলেন। তারপর নগরের বাইরে প্রচীর বেষ্ঠিত এক আঙ্গুর বাগানের ভেতর শুইয়ে দিলেন অতি যতœ সহকারে।
(চলবে…………..)

Related posts

Leave a Comment