শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, ‘আমাদের হয়রানি না করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করার সুযোগ দেন। যেটা অতি ঝুঁকিপূর্ণ সেটা বন্ধ করে ঝুঁকিমুক্ত হওয়ার সুযোগ দেন। যেখানে ঝুঁকি কম সেখানে কমপ্লায়েন্সের জন্য সু্যোগ দেন। কিন্তু ঢালাওভাবে যদি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেন তাহলে আমরা কিভাবে বাঁচব?’ একই সঙ্গে একটি রেস্টুরেন্টও অনুমোদনহীন নয় এবং কমার্শিয়াল ভবনে রেস্টুরেন্ট করা যাবে না, কোথায় লেখা আছে বলে প্রশ্ন করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে রেস্তোরাঁ শিল্পের সংকট, উত্তরণের উপায় এবং আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনা করা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান হাসান বলেন, ‘কোনো রেস্তোরাঁই অনুমোদনহীন নয়। আমাদের কাছে ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট সার্টিফিকেট আছে।
আমাদের কাছে সিভিল সার্জন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ আছে। এখানে দু-একটা লাইসেন্স থাকে না। কারণ আমরা আবেদন করার পর দীর্ঘসূত্রতা, যেভাবে কমপ্লায়েন্স এমনভাবে করে রাখা হয়েছে যাতে আমরা সনদ না পাই। আবার লাইসেন্স না নিতে পারলেই তাদের জন্য সুবিধা।
তিনি বলেন, ‘কমার্শিয়াল ভবনে রেস্টুরেন্ট করা যাবে না, কোথায় লেখা আছে? বেইলি রোডের ঘটনার পরে এই প্রথম শুনলাম। যেই বিল্ডিংয়ের মালিক আমাদের ভাড়া দিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? প্রতিটি রেস্টুরেন্ট ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে। তাহলে সিটি করপোরেশন কেন ট্রেড লাইসেন্স দিল? আপনারা এই প্রশ্ন তুলছেন না। আমাদের কোনো অবৈধ রেস্তোরাঁ নেই। এখন রাজউকের অনুমতি যদি না থাকে তাহলে এত দিন কিভাবে চলল? রাজউকের অনুমতি ছাড়া ওই ভবন মালিক কেন রেস্তোরাঁ করতে দিল? তাহলে আমরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যে বিনিয়োগ করেছি তার কী হবে? আসলে আমাদের বাঁচতে দেওয়া হবে না।
বেকারি শিল্প শেষ, এখন রেস্তোরাঁ শিল্প শেষ করবে। কিছু লোকের হাতে চলে যাবে, মুষ্টিমেয় শিল্পপতিরা নিয়ে নেবে। এ জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এখন আমাদের ওপর জুলুম করা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো নিয়ে ইমরান হাসান বলেন, রেস্টুরেন্টে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় একাধিক সংস্থা থেকে। আইন-শৃঙ্খলা কর্মে নিয়োজিত বাহিনী, যেমন―আনসার, পুলিশ ও এলিট ফোর্স র্যাব বাহিনীও তাদের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটা হয়তো একটু বাড়াবাড়ি। কেননা নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সরকারের একটি কর্তৃপক্ষই গঠন করেছে। তাদের কাজটি তাদের করতে দিতে হবে।’
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারে না। পুরো ভবনটাই ছিল অনিয়মে ভরা। ভবনটির অনুমোদন দিয়েছে রাজউক, রেস্তোরাঁ সেক্টরটি তদারক করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, সংযুক্ত আছেন জেলা প্রশাসক প্রশাসনসহ অনেক অধিদপ্তর ও সংস্থা। ৪৬ জনের প্রাণহানির পর রাজউক ও সিভিল ডিফেন্সের টনক নড়েছে। ঘটনার পর থেকেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার জব্দ করছে এবং স্টাফদের গ্রেপ্তার করছে। এটি সমস্যার সমাধান নয়।