বান্দরবানে কুকি-চিনের সদস্য শনাক্তে কঠোর নিরাপত্তা, গ্রেপ্তার ৬০

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টারঃ
বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জেরে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঈদের আগে ব্যাংক ডাকাতি ও থানায় হামলার মতো দুর্ধর্ষ ঘটনা ঘটায় পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এর প্রেক্ষিতে বান্দরবানে ঈদের ছুটিতে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঈদের ছুটি দেওয়া হয়নি বান্দরবান পুলিশ প্রশাসনের কোনো সদস্যকে। বরং বাইরের জেলা থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য নেওয়া হয়েছে জেলাটিতে। বাড়ানো হয়েছে চেক পোস্ট ও টহল। এদিকে কেএনএফ সদস্যদের চিহ্নিত করতে চলছে জোর প্রচেষ্টা। বিশ্লেষণ করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ।

পাহাড়ে কুকি-চিনের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে ৬০ জন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আছেন কুকি-চিনের ‘গুরু’ হিসেবে পরিচিত গোষ্ঠীটির উপদেষ্টা লাল লিয়ান সিয়াম বম (৬৫)। তবে গোষ্ঠীর প্রধান নাথান বম রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তার স্ত্রী ও রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স লাল সমকিম বমকে বদলি করা হয়েছে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যার হাসপাতালে। এ ছাড়া একই হাসপাতালের নার্স দীপালি বাড়ৈকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বান্দরবানের পুলিশ সদস্যরা স্টেশনে রয়েছেন। ঈদের ছুটিতে বিশেষ নিরাপত্তায় তারা দায়িত্ব পালন করছেন।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম সমকালকে জানান, ঈদের ছুটিতে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি চেক পোস্ট ও টহল সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে।

থানায় হামলা ও ব্যাংক ডাকাতির মামলা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িত কেএনএফ সদস্যদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। ব্যাংক লুটে জড়িত কেএনএফ সদস্যদের অধিকাংশই ছিলেন নারী। সশস্ত্র অবস্থায় তারা হামলা চালায়। তাদের মুখে কালো রং মাখা ছিল।

সমকালের হাতে আসা কয়েকটি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ব্যাংকে ঢুকে কেএনএফ সদস্যরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সকলকে জিম্মি করছে। কেউ কেউ অস্ত্র তাক করে রেখেছিল।

গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করা যায়নি। রুমা ও থানচিতে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দুই উপজেলার সার্বিক নিরাপত্তায় নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।

Related posts

Leave a Comment