বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি: বিএনপি একটি হতাশাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে: কাদের

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

বিএনপি পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগ এনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ নয়জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় এ আবেদন করা হয়।
মামলার আবেদনে মো. রিয়াজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, ১৬ ও ১৭ জুলাই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর নির্দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে অশালীন ও রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর উদ্দেশেও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। এসব বক্তব্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পাভেল সিকদারসহ দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার করেছেন। মামলার আবেদনে ফেসবুকের একটি লিংকও উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে আসামি হিসেবে আরও সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম (শ্রাবণ), সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ (জুয়েল), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পাভেল সিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী রবিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্যসচিব রফিকুল আলম (মজনু)।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) জানান , বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত এলে আবেদনটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন রাজপথে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ঠিক তখনই কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত পবিত্র ঈদুল আজহায় দলের নেতাকর্মীরা পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করার সময় সরকার দেশব্যাপী বীভৎস সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নাওয়াজকে হত্যার উদ্দেশে বুড়িরচর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আটকে রেখে প্রায় ৫ ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ছাত্রদল নেতা শাহ নাওয়াজ গত ১৮ জুলাই নিজ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলাধীন হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের মাইজদি বাজারের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় স্থানীয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক সাজেদ, যুবলীগ নেতা আবদুর রহিম ও জীবনের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা ও তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।
অপরদিকে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু হুশিয়ারি দিয়েছেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটসহ সকল সমস্যার সমাধান রাজপথেই হবে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই দেশ, এই ভূমি, এই দেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্রের পক্ষে। সুতরাং রাজপথে আন্দোলন হবে না এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই।
ঢাকা কলেজের সাবেক জিএস ও বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অপরাজেয় বাংলাদেশ এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।

বিএনপি একটি হতাশাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে: কাদের
জনগণকে আস্থায় রাখতে না পেরে বিএনপি একটি হতাশাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত নিরাশার গল্প শুনিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে। তারা খুব সচেতনভাবেই এটি করছে যেন মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে, সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরির পাঁয়তারা করছে দলটি। প্রকৃতপক্ষে, হীন রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টায় শান্তিপ্রিয় মানুষকে আত্মঘাতী করে তোলার মতো দুরভিসন্ধি বিএনপির অর্বাচীন রাজনীতির পরিচায়ক।
ওবায়দুল কাদের তার বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির নেতাদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার, উসকানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।-পার্সটুডে

Related posts

Leave a Comment