বৃক্ষ লাগাতে উৎসাহী করতে ঠাকুরগাঁওয়ে বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক তিতাস

মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক মোঃ আমিনুল ইসলাম তিতাস। পেশায় সরকারী কলেজের একজন শিক্ষক। পরিবেশবাদী এই শিক্ষক দেশের বিভিন্ন জেলায় ছুটে চলেছেন জনসাধারণকে গাছ লাগাতে উৎসাহী করতে। পৌর শহরের নর্থ সার্কুলার রোডে দেখা মিলে তার। “বাঁচবো মোরা নিজের গাছের অক্সিজেনে” এই শ্লোগানে বিশেষ একটি বাহন নিয়ে জনসাধারণকে গাছের বিভিন্ন বিষয়ে বুঝিয়ে বৃক্ষরোপনে উদ্বুদ্ধ করতে দেখা যায়।
গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তিনি। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করার পাশাপাশি দেশের সবুজায়নে নিজ উদ্যোগে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গাছ লাগাতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়ের দেশের বিভিন্ন জেলায়। কখনো রাস্তায়, কখনো মসজিদের সামনে, কখনও স্কুল-কলেজের সামনে, বাজারে, পথে-ঘাটে চার চাকার একটি বিশেষ যানে পোস্টার ও ফেস্টুন লাগিয়ে অবস্থান করেন তিনি। এ পর্যন্ত দেশের প্রায় ১৬টি জেলায় সচেতনতামূলক এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন বলে জানান তিনি। কখনো হেঁটে, কখনও বা কোন স্থানে দাঁড়িয়ে পথচারীদের গাছ লাগানোর বিষয়ে জানিয়ে থাকেন। এই ব্যতিক্রমি উদ্যোগকে সাধুবাধ জানিয়ে জনসাধারণও সেখানে দাঁড়িয়ে তার এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিভাগে অনার্স ও ১৯৯৯ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় (শিক্ষা) উত্তীর্ণ হয়ে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজে গণিত বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যেগাদান করেন। পরবর্তিতে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রমপাড়া এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে তিতাস। তার স্ত্রী উম্মে রায়হান ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তার পরিবারে একজন কন্যা সন্তান রয়েছে।
জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের শুরুটা হয় যেভাবে তার বর্ণনা দিতে গিয়ে জানান, ২০২০ সালে করোনার সময় ঘরে বসে থাকাকালীন সারা দেশে ব্যাপক গাছ লাগানো এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির চিন্তা মাথায় আসে তার। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বেরিয়ে পরেন তিনি। ছুটি পেলেই দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে গাছের চারা বিতরণ করেন তিনি। ঈদের ছুটিতে ঠাকুরগাঁও এসে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা বিতরণ করেন। পথচারী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে পেয়ারা, জাম, চালতা, বেল, কদবেল, কাঁঠাল, নিম, অর্জুন গাছের চারা বিতরণ করেন তিনি। এমনকি নিজের পিতার মৃত্যুবার্ষিকীতে সদকায় জারিয়া হিসেবে গাছের চারা বিতরণ করেন।
পরিবেশবাদী এই শিক্ষক ইতিমধ্যে কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ গাজীপুর রোটারি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে পরিবেশ নিয়ে কাজের জন্য সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন। এছাড়াও আমব্রেলা ইয়্যুথ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় “এনভায়ারমেন্ট এওয়ার্ড-২০২২” এ ভূষিত হয়ে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রাপ্ত হন। ঠাকুরগাঁওয়ের জনসাধারণ তার এই কাজকে সাধুবাধ জানিয়েছেন।

Related posts

Leave a Comment