রামেক হাসপাতালে ব্রেন ইনফেকশনে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

মঈন উদ্দীন: নওগাঁর রানীনগরে ঢাকা থেকে আসা এক যুবক জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ করোনা ভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন তিনি। শনিবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।  হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, আলামিন করোনা নয়, ব্রেন ইনফেশনে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
তবে ওই যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে গ্রামবাসী ও ইউপি মেম্বার প্রথমে তাকে গ্রামেই প্রবেশ করতে দেননি। স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। শনিবার সকালে প্রচ- জ্বর আর কাশি নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা থেকে নওগাঁয় আসেন। এ সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও গ্রামের কিছু লোক তাকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেননি। চিকিৎসার জন্য তাকে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানেও চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা না করে ফিরিয়ে দেন। এরপর আবারও তাকে নিয়ে এসে ভেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের বারান্দায় রাখা হয়। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হলে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে চিকিৎসকরা তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠান। অবশেষে তিন হাসপাতাল ঘুরে রামেকে গিয়ে মারা যান তিনি।

করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাত ৯টার দিকে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সেখানে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। রাতেই ওই ছাত্রের বাড়ি স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
ওই ছাত্রকে প্রাথমিক পরীক্ষা করেছেন বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাজমুস সাদাত। তিনি জানান, ওই ছাত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হলে শনিবার বাড়িতে ফেরেন তিনি। তার জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তাই তাকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। ঢাকায় তিনি বিদেশিদের সাথে মেলামেশা করতেন কি না সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রাজশাহীতে আরও ১৩১ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত শঙ্কায় রাজশাহীতে আরও ১৩১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় তাদের খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয় আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ নিয়ে এখন রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫০৯ জন। তবে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯১ জন, বাঘায় সাতজন, পুঠিয়ায় পাঁচজন, বাগমারায় সাতজন, মোহনপুরে ১২ জন, তানোরে একজন, পবায় দুইজন এবং গোদাগাড়ীতে ছয়জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের রাখা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন তারা বাড়িতেই থাকবেন।
এদের মধ্যে ভারত ফেরত ১১১ জন, দুবাই ফেরত দুইজন, কাতারের একজন, কঙ্গো ফেরত একজন, উমান ফেরত একজন, সৌদি আরবে দুইজন, ইন্দোনেশিয়া ফেরত তিনজন, মালেশিয়ার একজন, চীন ফেরত পাঁচজন, আলজেরিয়া ফেরত একজন, জাপান ফেরত একজন, থাইল্যান্ড ফেরত একজন ও ফিলিপাইন থেকে দুইজন এসেছেন। ডা. এনামুল হক জানান, গত ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে রাজশাহী এসেছেন এক হাজার ৩৪৪ জন। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় মোট ৮৮৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ দিন পূর্ণ হওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৩৮০ জনকে।

Related posts

Leave a Comment