করোনা ভাইরাসে রাসিকের নিম্ন আয়ের ২০ হাজার পরিবার পাচ্ছেন চাল-ডাল

মঈন উদ্দীন:

করোনা ভাইরাসের কারণে আর্থিক সংকটে থাকা নিম্ন আয়ের ২০ হাজার পরিবারকে চাল ও ডাল দেবেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি চাল ও ৫০০ গ্রাম ডাল দেওয়া হবে। শনিবার সকাল থেকে নগর ভবনে চাল ও ডাল প্যাকেট করে প্রস্তুত এবং ৩০টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। এখন ওয়ার্ড কার্যলয় থেকে এসব চাল-ডাল বিতরণ হবে।
এ ব্যাপারে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীবাসীকে নিরাপদ রাখতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে নগরবাসীর পাশে আমরা সব সময় আছি। আর্থিক সংকটে অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে চাল-ডাল বিতরণ করা হচ্ছে।
মেয়র আরো বলেন, করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বা করণীয় বিষয়ে সভা, ৩০টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে কমিটি গঠন, আপদকালীন খাদ্য সরবরাহ, ২০ হাজার মাস্ক তৈরি এবং অতিসত্ত্বর বিতরণ, নগরীর ২৭টি পয়েন্টে সেনিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষা ১ এপ্রিল থেকে

করোনা ভাইরাস শনাক্তে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) ল্যাব প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত কার্যক্রম শুরু হবে। শনিবার দুপুরে ল্যাব প্রস্তুত কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, শুক্রবার থেকে করোনা ভাইরাস শনাক্তে ল্যাব স্থাপন করার কাজ শুরু হয়েছে। রোববারে মধ্যে পিসিআর মেশিন স্থাপন কাজ শেষ হবে। এরপর পিসিআর মেশিন পরিচালনার জন্য ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ আসবেন। আমরা আশা করছি আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত কার্যক্রম শুরু হবে।
হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজী বিভাগের চারটি কক্ষে এই ল্যাব প্রস্তুত করা হচ্ছে। ল্যাব স্থাপন কাজের অগ্রগতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে এসে পৌছেছে। করোনা পরীক্ষার কিটও চলে আসছে। ১ এপ্রিল থেকে ল্যাব চালু করার ট্রার্গে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী বিভাগে ৭৩৫ জন হোম কোয়ারেন্টিনে

রাজশাহী জেলায় শনিবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৪২ জন বিদেশফেরত ব্যক্তি। তবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী এ জেলায় এখনও শনাক্ত হয়নি। সর্বশেষ শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে  শনিবার (২৮ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৭ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় নতুন করে মোট ৭৩৫ জনকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত এর সংখ্যা ছিল ৩২৭ জন। তারাও ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- জেলার নতুন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ৪৭ জনের মধ্যে ভারত থেকে এসেছেন ৩৬ জন, মালদ্বীপ থেকে একজন, দুবাই থেকে দুইজন, কাতার থেকে দুইজন, সৌদি আরব থেকে একজন, মালয়েশিয়া থেকে দুই জন, ফিলিপাইন থেকে দুইজন ও আরব আমিরাত থেকে একজন।

করোনাশঙ্কায় রাজশাহীতে আরও  ৪৭ বিদেশফেরত কোয়ারেন্টাইনে

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত শঙ্কায় রাজশাহীতে খুুঁজে বের করে আরও ৪৭ জন বিদেশফেরতকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৪২ জন। তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮ জন, পুঠিয়ায় ৪ জন, বাগমারায় ১৮ জন, মোহনপুরে ১২ জন, তানোরে ১ জন এবং গোদাগাড়ীতে ৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের রাখা হয়েছে। আগামী ১৪ দিন তারা বাড়িতেই থাকবেন।
এদের মধ্যে ভারত ফেরত ৩৬ জন, দুবাই ফেরত ২ জন, কাতারের ২ জন, সৌদি আরবে ১ জন, মালেশিয়ার ২ জন, আরব আমিরাতের ১ জন ও ফিলিপাইন থেকে ২ জন এসেছেন।
ডা. এনামুল হক জানান, গত ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে রাজশাহী এসেছেন এক হাজার ৩৪৪ জন। এদের মধ্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় মোট ৭৫৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ দিন পূর্ণ হওয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ২১৬ জনকে।

Related posts

Leave a Comment