অলিম্পিকের থম্পসনই দ্রুততম মানবী

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

‘জ্যামাইকা, ল্যান্ড উই লাভ’-সংগীতের সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। অলিম্পিক, কমনওয়েলথ গেমস কিংবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ-যেখানেই অ্যাথলেটিক্স, সেখানেই জ্যামাইকা। কিন্তু প্রচলিত এই ধারা বিলীন হওয়ার পথে।
জ্যামাইকানদের পেছনে ফেলে উঠে আসছেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের অ্যাথলেটরা। বুধবার সংগীতটি আলেকজান্ডারে বাজানোর উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন অ্যালেইন থম্পসন। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন এই অ্যাথলেট বার্মিংহামে দ্রুততম মানবীর খেতাব জেতেন।
সময় নেন ১০.৯৫ সেকেন্ড। দ্রুততম মানব কেনিয়ার। ১০.০২ সেকেন্ড সময় নিয়ে ফ্রেন্ডিন্যান্ড ওমানিয়া পেছনে ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আকানি সিম্বানিকে (১০.১৩ সেকেন্ড)। অবিশ্বাস্যভাবে উঠে এসেছেন শ্রীলংকার অ্যাথলেট আবেকুন। দশমিক ১ সেকেন্ড পেছনে থেকে ব্রোঞ্জ জেতেন এই লংকান।
এক সময় উসাইন বোল্ট, ইয়োহান ব্লেকরা গতির ঝড় তুলে স্বর্ণপদক জিততেন। কিন্তু বার্মিংহামে এখন পর্যন্ত হতাশ করেছে দেশটি। বৃহস্পতিবার আলেকজান্ডারের প্রেস গ্যালারিতে দেখা হলো অ্যানসেরিওর সঙ্গে। জ্যামাইকার অন্যতম নামকরা ক্রীড়া সাংবাদিক। অনেক বছরের চেনা।
২০১৪ সালে গ্লাসগো ও ২০১৮ গোল্ডকোস্টেও একসঙ্গে কাজ করেছি আমরা। সেরিওর কাছে জ্যামাইকার অ্যাথলেটের দৈন্যের কথা জানতে চাইলাম। গ্লাসগোতে জ্যামাইকা ১০টি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও আটটি ব্রোঞ্জ জিতেছিল। যার অধিকাংশই এসেছিল অ্যাথলেটদের কাছ থেকে। গোল্ডকোস্টেও ৭ স্বর্ণ পেয়েছিল এই ইভেন্টে।
ডন কুয়েরি, মারলিন ওটি, আসাফা পাওয়েল, উসাইন বোল্ট ও শেলি অ্যান ফ্রেজারের দেশের করুণ হাল মানতে পারছেন না সেরিও নিজেই। জানালেন, ‘জ্যামাইকার বর্তমান প্রজন্ম বোল্ট-শেলিকে আইডল ধরে এগোয়। সবার লক্ষ্যই বোল্ট, শেলি হওয়া। বাবা-মা’রাও সন্তানদের অ্যাথলেটিক্সের দিকে ঠেলে দেন। অ্যাথলেটিক্স আমাদের যেন দ্বিতীয় ধর্ম। ছেলেপুলেরা পড়াশোনার পর বাকি সময়টা দৌড়ে কাটায়। যারা স্কুলে যায় না তারা সারা দিন খেলা নিয়ে পড়ে থাকে। অ্যাথলেটিক্সই আমাদের বিশ্ব চিনিয়েছে।’
হতাশ কণ্ঠে সেরিও বললেন, ‘আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় অনেক জ্যামাইকান অ্যাথলেট এখন ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি দিচ্ছেন।’
তার কথায়, ‘আমেরিকান বাস্কেটবলও আমাদের অ্যাথলেটিক্সকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। লম্বা লম্বা অ্যাথলেটরা পাড়ি জমাচ্ছেন আমেরিকায়। ঝুঁকেছেন বাস্কেটবলে। রাশি রাশি ডলারের লোভে। অ্যাথলেটিক্সে তো আর তত পয়সা নেই।’
সেরিওর কথা শুনে চমকে উঠলাম। ‘রাশি রাশি ডলার।’
আমাদের দেশের এক শ্রেণির ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়া সাংবাদিক গেমস থেকে উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পালিয়ে যান। খেলাধুলা নয়, শ্রম বাজারে হারিয়ে যান বাংলাদেশের ক্রীড়াব্যক্তিরা।

Related posts

Leave a Comment