গাংনীতে গমের বাম্পার ফলন, উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী আবাদ

আমিরুল ইসলাম অল্ডাম,মেহেরপুর:
মেহেরপুরের গাংনীতে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার গম চাষে বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। গাংনীতে এবছর গম চাষ বেড়েছে। অথচ আগের বছর গুলোতে গাংনীতে গম ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের কারণে কৃষি অফিস গম চাষের ব্যাপারে চাষিদের নিরুৎসাহিত করেছিল।কৃষি অফিসের ভুল পরামর্শে গমের চাষের পরিবর্তে অনেকে বেশীর ভাগ পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছিল মসুরী ও তামাক।তবে এবছর উপজেলার সব মাঠে প্রচুর গম চাষ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নিরুৎসাহিত করার পরও ২০২২ ইং বছরে উপজেলায় ৬ হাজার ৩৫০উপ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল।আগের বছরের মতো গমক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। গত বছর এ উপজেলায় ৬ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল। গত মৌসুমে ঝুঁকি নিয়েও যারা গম চাষ করেছিল তারা যে আশা করে ছিলো তার অধিক বেশি ফলন হয়েছিল।
চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। গম চাষে বাম্পার ফলন দেখা গেছে। বিধা প্রতি ১৪ মন থেকে ১৬ মন গমের ফলন হয়েছে। জেলায় গম চাষের লক্ষমাত্রা ধরা ছিল ১০ হাজার হেক্টর কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, এ বছর রবি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে।
গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, গত বছর আমি ৬৬ শতক (২ বিঘা)জমিতে গম চাষ করেছিলাম তাতে ফলন হয়েছে ৩৬ মণ। আমি এ বছরে একই জমিতে গম চাষ করেছি । দুই একদিনের মধ্যে গম কর্তন করবো।আশা করি আগের চেয়ে এবছর ফলন ভাল হবে।
একই কথা জানালেন রাইপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম । গত বছর তিনি ৫০ শতক জমিতে গম চাষ করে ছিলেন তাতে ফলন পেয়েছেন ২১ মণ,তিনি এবছর একই জমিতে গম চাষ করেছেন।আবহাওয়া ভাল হওয়ার কারনে এবছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। হিন্দা গ্রামের আব্দুল গফুর জানান, তিনি ৫০ শতক জমিতে এবছর গম চাষ করেছেন ।গমের ফলন ভাল হবে।

গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের মেম্বর আবুবকর জানান, উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি গম-৩৩ চাষ করেছেন।অনেকেই বারি-৩০ ও বারি-৩১ ও ৩২ জাতের গম চাষ করেছেন। গমচাষের শুরু থেকেই ব্লাস্ট নামের ছত্রাক জনিত রোগটির বিষয়ে এবার যথেষ্ট সজাগ আছেন তারা। তাই সময়মত জমির পরিচর্যা করাসহ ব্লাস্ট ছত্রাক থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করা হয়েছে বলে জানান তারা।
কৃষি বিভাগের পরামর্শ উপেক্ষা করে গত বছর যেসব কৃষক গম চাষ করেছিল,কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সময় মত গমক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করায় ফলন ভাল হয়েছিল।তাই জেলার গমক্ষেত গুলোতে এবার ছত্রাকের প্রকোপ দেখা যায়নি। জনশ্রুতি রয়েছে, চলতি মৌসুমে শীতের প্রকোপ বেশী তাই বেশী শীতে গম ক্ষেত ভাল হয়েছে। তবে গাংনী উপজেলায় গম ক্ষেতে বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

Related posts

Leave a Comment