বেতন ও বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন পোশাক শ্রমিকরা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
গাজীপুরের শ্রীপুরে নতুন কাঠামোতে বেতন ও পূর্ণ বোনাসের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ওই সড়কের জৈনাবার এলাকায় গুলশান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এতে ওই মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কের পাশের একটি রেস্টুরেন্ট ভাঙচুর করেন। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে গুলশান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের সামনে অবস্থান নেন। বিকেল পৌনে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান করছেন।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বলেন, সরকার নতুন বেতন অবকাঠামো ঘোষণা করলেও তাদের বেতন বৃদ্ধি করছে না। কারখানার মালিক পরিবর্তন হওয়ায় জানুয়ারি মাস থেকে নতুন কর্তৃপক্ষ কারখানা চালাচ্ছে। তাদের জানানো হয়েছিল, নতুন কাঠামোতে বেতন দেবে। কিন্তু তা দেওয়া হচ্ছে না। পূর্ণ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও এখন বলা হচ্ছে, ৩০০-৫০০ টাকা বোনাস দেবে। ঈদে সেমাই চিনি দেবে। এ কারণে তারা নতুন কাঠামোতে বেতন ও পূর্ণ বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন।

তারা আরও বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সড়কে অবস্থান করেছেন। পুলিশ হঠাৎ করে তাদের ওপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা করে। সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

তরী রেস্টুরেন্টের মালিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে পুলিশ এসে তরী রেস্টুরেন্টের পাশে অবস্থান নেয়। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা রেস্টুরেন্ট ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে রেস্টুরেন্টের সমস্ত দরজা- জানালা ভেঙে যায়। তাতে রেস্টুরেন্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।’

এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা শাহ্ মোহাম্মদ বলেন, ‘মালিকের সিদ্ধান্ত আমরা শ্রমিকদের জানিয়েছি। দেশের সকল কারখানা বেতন বৃদ্ধি করলে আমাদের কারখানাও করবে। এরপরই শ্রমিকরা রাস্তায় চলে যায়। বোনাসের বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু শ্রমিকরা আমাদের কথা না মেনে আন্দোলন করছে।’

মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে। শ্রমিকদের লাঠিপেটা করা হয়নি। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে একটি রেস্টুরেন্ট ভাঙচুর চালিয়েছে। দুই ঘণ্টা পর বিকেল ৩টার দিকে মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।’

Related posts

Leave a Comment